ভয়াবহ ভূমিকম্পে তছনছ মিয়ানমার। এরই মধ্যে দেড় সহস্রাধিক মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। চারিদিকে ধ্বংসস্তূপ। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তা দিতে মিয়ানমারে রওনা করেছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি উদ্ধারকারী দল।
রোববার (৩০ মার্চ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল ফেসবুকে এই সংক্রান্ত তথ্য ও ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গতকাল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ‘ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে ঔষধ, ত্রাণসামগ্রী, উদ্ধার এবং মেডিকেল সহায়তা প্রদানে বিশেষ বিমানে মিয়ানমারে যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারী দল।’
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে ঔষধ, তাঁবু, শুকনা খাবার এবং চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য রেসকিউ টিম ও মেডিকেল টিম প্রেরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
রোববার (৩০ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি কুর্মিটোলা থেকে বিমান বাহিনীর ১টি সি-১৩০জে বিমান এবং আর্মি এভিয়েশনের ১টি কাসা সি-২৯৫ ডব্লিউ বিমান জরুরী ত্রাণ সামগ্রীসহ মায়ানমারের ইয়াংগুনের উদ্দেশ্যে রওনা করে। গমনের প্রাক্কালে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধান উপস্থিত ছিলেন। তারা মিয়ানমারে জরুরী সহায়তা প্রদানকারী দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের পূর্বপ্রস্তুতি পরিদর্শন করেন।
গত শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে ৭.৭ মাত্রার ভয়াবহ এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পে মায়ানমারে ১৬০০ জনের অধিক নিহত এবং ৩০০০ জনের অধিক আহত হয়েছে বলে জানা যায়। মায়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য ও পানি, বাসস্থান সংকট এবং জরুরী চিকিৎসা সেবার অভাবে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের এই মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশ মর্মাহত এবং তাদের সহায়তা প্রদানে বদ্ধপরিকর।
উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স হতে ১০ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও, চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মায়ানমার সরকারের প্রয়োজন সাপেক্ষে পরবর্তীতে এই উদ্ধারকারী এবং মেডিকেল দলসমূহ প্রেরণ করা হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রেরিত এই মানবিক সহায়তা মায়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের দুর্ভোগ কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আগামী দিনগুলোতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বৈশ্বিক যে কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আত্মনিয়োগের জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ।